সারথি, ছুতার ও বার পানটিরি কারপেনটার
Sarathi, Chhutar and Bar Pantiri Carpenter

English translation

[এইটা লিখাটা আদতে একই নামের পয়লা লিখা আখ্যানের এক ভাগ যদিও কিছু নুতন কথাও এইটাতে কওয়া হইছে৷ অপর ভাগ মূলে হজরত ঈসা সম্পর্কিত৷ ওই অংশ
"বার পানটেরি থিকা কারপেনটার ও পরে কারপেনটারের পোলা" এই নামে নুতন কইরা লিখা হইছে৷]

সারথি হইল যে রথ চালায় আর ছুতার হইল যারে ইংরেজিতে কয় কারপেনটার৷ সংযোগ হইল ছুতার রথ বানায় ও লড়াইয়ে নষ্ট হইলে তা মেরামত করে৷ কারপেনটারিউস আছিল একটা রোমান ফৌজ যাগো কাম আছিল ফৌজের রথ, চাকা, গাড়ী বানান ও মেরামত করা৷

মহাভারতে কর্ণ নামে এক বীরের গপ্প আছে৷ ও লড়াই করছে যে দলের সহায় কৃষ্ণ আছিল ওইদলের বিরুদ্ধে৷ মনে হয় ফিলিস্তীনের খৃষ্ট ও সংস্কৃত ভিতের সবশেষের ভারতীয় সংস্করণের কৃষ্ণের মাঝে গপ্পের হরেক সংস্করণ আছিল যার একটার নায়ক আছিল কর্ণ৷

ভুল দলে থাকলেও এইটা বুঝা যায় কর্ণকে একটা কমবক্ত নায়ক হিসাবে দেখান হইছে৷ বস্তুত কর্ণ ও কৃষ্ণের বিরোধিতার সাথে এচিলিস ও হেক্টরের আড়াআড়ির তুলনা করা হইছে৷ এইটা একাই পুছ করার কারণ হয় যে মহাভারতের গপ্পের আগের একটা সংস্করণে কর্ণ পরম চরিত আছিল নাকি৷

কর্ণের নাম তথাকথিত প্রাকৃত ভাষাগুলায় কৃষ্ণের নামের বেশি কাছে আছিল৷ যেমনে বাংলা কানাই (কানু), আওয়াধি কানহা৷ উপমহাদেশে অধিকতর পুরান এই জবানগুলার গুরুত্ব ঠাওর করতে পাঠকগো কতগুলা বিষয় জানতে হইব৷

      ভারতীয় খোদাই করা লিখায় সংস্কৃতের দেরিতে আবির্ভাব৷
      তথাকথিত মা সংস্কৃত তত্ত্ব নিয়া বিতর্ক৷
      ভারতে সংস্কৃতের বিস্তার ও ব্যাভারের ইতিহাস৷ আদিতে খালি একটা টান বর্ণের লোক সংস্কৃত জবান ব্যাভার করব৷
      রাজপুত জাতির ভারতে আহনের ইতিহাস৷
      ভারতে শক পভাব৷

নিচের বিষয়ে জ্ঞান উপরি অভিজ্ঞতা৷

      সংস্কৃত ভিতের হিন্দুধর্মের গড়নে খৃষ্টান মিশনারিগো অপরিষ্কার রোল৷

কর্ণ ও অর্জুনের একি মা৷ কর্ণের বাবা দেবতা সূর্য৷ অর্জুন ও ওর অপর পাঁচ ভাইও দেবতাগো পোলা৷ এইটা হইছে কারণ খৃষ্টানগো বিপরীতে জড়িত লোক হরেক দেবতায় বিশ্বাস করত৷

আরেকটা রচনায় আম্রা যুক্তি খুঁজুম যে অর্জুন নামটার পিছনে রইছে শকগো অতিরিক্ত র ধ্বনিসহ এসসেন নাম৷ যেহেতু কেউ নানা জায়গা থনে পরিষাণ করা নানা ভারতীয় গোত্রের মাঝে অর্জুন ও অর্জুনিয়া সম্পর্কে পাওয়া গপ্পে অপর আরো বিচি বিচয় বা সন্দ করতে পারে তাই এই রচনায় আম্রা ব্যাপারটা আর ঘাটুম না৷ ফালতু র ধ্বনির নজির হইল তৎসম বাংলায় ক্রমেলক উট (ক্যামেল)৷ আরেকটা উদাহরণ হইল নিচে কওয়া ব্রজ ভোজা (মাজুস)৷

কেবল সিস্তানে কিংবা ইরানে বা উপমহাদেশের বাইরে রইয়া যাওয়া শকই না ঋগ্বৈদিক-আভেস্তান ও তথাকথিত নুতন আর্য ভাষাগুলা আদিতে যাগো আছিল ওগোও আম্রা শক বিবেচনা করছি৷ এইটা একটা জটিল ব্যাপার যার লাই একটা লম্বা বয়ান দরকার৷ এখন আমরা খালি শাকাতাইয়ানাকে মনে রাইখা ব্যাপারটা মাইনা নিম৷

কর্ণের মা কুন্তী কর্ণের জনম দেয় কুমারী হালে এবং ভয়য়ে ও কর্ণকে গাঙয়ে ফেইলা দেয়৷ নন্দ নামে এক সারথি কর্ণকে উঠায়৷ নন্দ ও ওর বিবি রাধা কর্ণকে বড় করে৷

যিশু ও কৃষ্ণের তুলনায় কেউ কৃষ্ণকে কুমারীর পোলা কইলে পরম বিতণ্ডা হয়৷ এইটা কি ভুল না কোন উৎসে এইরূপ আছিল তা এখন কওয়া মুশকিল কারণ কৃষ্ণ গপ্পের বহুরূপ আছিল৷ তবে কিছু লোক যে এইটাকে যিশু ও কৃষ্ণ আদিতে এক এই মতের বিরুদ্ধে ব্যাভার করছে ওগো যুক্তির অসারতা ছাফ দেখা যায়৷

এইভাবে কর্ণকে রাধেয় ও সুতাযা কওয়া হয়৷ পরের নামটা দেয়া হইছে কারণ ওর পালক বাবা আছিল একজন সুতা মানে সারথি ও ছুতার (কারপেনটার)৷

কর্ণের পালক মা এই দোসরা রাধার গুরুত্ব বেনযামিন ওয়াকারের আগে কেউ দিছে কিনা আম্রা জানি না৷ কৃষ্ণের পিয়ারা (কাম্য বস্তু) আছিল রাধা, কৃষ্ণের গপ্পের যেই রাধাকে অবশ্য বেবাকেই জানে৷

এই দুই রাধা আমাগো মনে করায় যিশুর গপ্পের দুইজন গুরুত্বের মেরিকে৷ কুমারী মেরি একটা বাস্তব চরিত এবং মাগ্দালিনের মেরি সম্ভবত ভুলে সিরজান কল্পিত চরিত৷

নন্দ ও রাধা দুঁহই "লুত মরুভূমি" নামের আখ্যানে কওয়া একটা ধ্বনির রূপান্তর দেখায়৷ উদাহরণ মহাপদ্ম, নয় নন্দের পথম, পুরান ভারতের নন্দ বংশের এক রাজা৷ আম্রা এই বংশকে ভারতে প্রাক-ইসলামী যুগের লোদি বংশ ভাবছি৷ পদ্ম ইংরেজীতে লোটাস৷ পদ্মসম্ভব মনে হয় আফগানিস্তানের লোদি দেশের লোক আছিলেন৷ উনার এক পদবী পদ্মের মণি যখন আমাগো ইশারা দিছে লুতের মণি আদিতে হজরত ঈসার উপাধি আছিল তখন লিথারগোয়েল ঈসার কথা আমাগো নজরে আহে নাই৷

যেহেতু লিছিয়ানগো বিরাট লুত দায়ভাগের সাথে সম্পর্কিত করা হইছে পুছ করা যায় রাধা নামটার পিছে লিছিয়ান লাডা শব্দটা আছিল নাকি৷ লাডা শব্দের হরেক মানে৷ কেউ কয় এর মানে বিবি, কেউ কয় এইটা মাইয়ালোকও বুঝায়৷ কৃষ্ণকে কওয়া হয় লাধহমাধব৷

কিছু লেখক মনে করছে (আদি) শ্বেতদ্বীপ আছিল সুকুত্রা৷ ল্যাসসেন ভাবছে ভারতীয় খৃষ্টের গপ্পের উৎস আছিল শ্বেতদ্বীপ৷ ভারতকে ফিলিস্তীন, হাতরা, বনি হাযেরা বা বনি ইসমাইলীয় আগরের বণিক এবং আর্মেনিয়ার সাথে যোগকারী পার্থিয়ান বিশ্ব সুবাদে হালে আমাগো বহু খবর আছে৷

সুকুত্রার গ্রীক নাম আছিল ডিয়োসকোরিডেস৷ কেউ সন্দ করতে পারে "যমজ যমজ" (ডিডীমুস টমাস) কথাটার সাথে সুকুত্রার কোনো এক সম্পর্ক৷ এইভাবে আম্রা আহি লেডার গপ্পে যে আছিল যমজ বীর ডিয়োসকুরিগো মা৷ আম্রা যেমতে অন্যত্র দেখাইছি টমাস নামটা পয়দা হইছে সুববা, শামান ইত্যাদি জাতীয় শব্দ থিকা যেগুলা আগে নানা ভাষায় পুরানকালের সুফীগো বুঝাইত৷

কুন্তী, কর্ণ, কানাই, কৃষ্ণ সব নামগুলা হরেক ন ধ্বনি দেখায় যা কৃষ্ণের কেষ্টা নামটাতে নাই৷ কানীন শব্দটাকে ব্যাখ্যা করা হয় কুমারীর জনম দেওয়া, মানে অবিবাহিত যুনী মাইয়ার বাচ্চা৷ মহাভারতে কুন্তীর পালক বাবার নাম কুন্তীভোজা৷ এইখানে ভোজা সম্ভবত বুঝায় মাজুস (ম্যাগি)৷ মঘা ব্রাহ্মণ ও ভোজা মাইয়ালোকের পোলাপান মেলা জানা৷

লুত মরুভূমি নামের রচনায় কওয়া হইছে পুত ভোজার আরেক উচ্চারণ৷ পুত আছিল লতার কাছে পুরাকালের পাকিস্তানে বা ভারতে৷ লতা গুজরাটের পুরান নাম৷ বাইবেলের বিষয়াদির কিছু লেখক পুতকে ইথিয়পিয়ার সাথে সনাক্ত করছে৷ আফগানিস্তান, সুকুত্রা ও ইথিয়পিয়া আছিল সাবিউন-নাছারা পভাবের জ্ঞস্টিক চাকলা৷

ব্রজ মনে হয় ভোজা ও শকের একটা মিশাল মিরাস৷ বস্তুত মনে হয় ব্রজের আগের নাম আছিল পুতানা৷ মথুরার কিছু অংশকে এখনো পুতানা কয়৷ পূতনা নামের এক ডাইনীকে কৃষ্ণ মাইরা ফেলছে৷

মথুরা অবশ্যই মেসেরের মাতারিয়ায় কুমারী মেরির কাল্ট মনে করায়৷ এই ব্যাপারে ঘটনার পরম্পরা বুঝা ঐতিহাসিকগো জন্য একটা বিরাট সমস্যা৷ মূল সমস্যা হইল ভাওতাবাজিগুলা যেইগুলা এখন মৌলিক দলিল হিসাবে দেখান হয়৷ কোরানশরীফে হজরত ঈসার সময়কালের নিদেশ নাই৷ তবুও কিছু মুসলিম খামখা খৃষ্টানগো কওয়া সময়কাল মাইনা লয়৷

আবার মেগাস্থেনেস আদৌতে মথুরার কথা কইছিল কিনা তাও সন্দ করা যায়৷ মেগাস্থেনেস ভারতে আইছিল আন্দাজ খৃ: পূ: ৩০২ অব্দের দিকে৷ এই ব্যাপারে "মৃগাবতী ও মেরি মাগডেলেনি" নামের রচনায় ছিটান ছড়ান বহু ঐতিহাসিক কথা পাওয়া যায়৷ মনে হয় উরফা (এদ্দেসা, আর-রোহা) শহরে মেরি কাল্টের সাথে গ্রীক লেটো কাল্টের একটা মিশাল হইছিল৷ কিন্তু কবে?

বস্তুত তথাকথিত প্রাকৃত বাঙ্গালায় রাধার রুপ রাহি ও দখিন পশ্চিম বাংলার কিছু এলাকায় চালু ওর নাম রাই রোহা নামটার সোসর৷

কৃষ্ণ মানে কালা৷ মহাভারতের কথিত লেখকরেও কওয়া হইত কৃষ্ণ কারণ ও আছিল কালা৷ মনে হয় পুরাকালের ইথিয়পিয়ার পুরান যিশুও আছিল কালা৷ আর্য ভাষায় আর্য রাজাগো লিগা লিখা হইলেও কৃষ্ণের গপ্পের বিকাশ হইছে কালা সাধারণের দখিন ভারতে৷ এই কালা খৃষ্টের খর ধ্বনি থিকাও আইতে পারে কারণ আফগানিস্তান ও তুর্কী ভাষা পধান তল্লাটে কারা একটা হামেশা ব্যাভারের উপনাম আছিল৷

হরেক মিশাল বাদ দিয়া দুইটা পরম খাত চিন্তা করলে মনে হয় কর ধ্বনি আইছে খৃষ্ট থিকা আর ন ধ্বনি আইছে কুমারির কানীন থিকা এবং কিছুটা সম্ভবত ছুতারের কুন্দ থিকা যার লাই ছুতাররে কুন্দকার কয়৷ আবার এও হইতে পারে যে কর্ণ নামটা শকগো ফালতু র ধ্বনিসহ কানাই বা কানহা ছাড়া কিছু আছিল না৷

কুন্তীভোজা নামের তাৎপর্য পুরাটা বুঝি নাই৷ তবে এইটা গজনফরকে (গন্ডোফারনেস, Gondophernes) মনে করায়৷ গজনফরের আসল নাম আছিল বিন্দাফারনা (ভিন্দাফারনা)৷ ও আছিল পাঞ্জাবের একজন পার্থিয়ান রাজা যাকে ভারতের ক্যাসপার নামে মাজুসের সাথে সনাক্ত করা হইছে৷ ভাবা হয় ও ম্যাথিউর গসপেলের তিন মাজুসের একজন৷ কুশান ফৌজের রথের কারিগরদলকে মনে হয় কওয়া হইত "কুনডনেয়া" বা "কুনাডিয়ানো" কিংবা এইরকম কিছু৷ এরা জরুরী অফিসার আছিল৷ সাপটা ছুতার না৷

হইতে পারে ভারতীয়গো কাছে ছুতারের সামাজিক ঠাঁই বিরক্তিকর ঠেকছে৷ সুতরাং লড়াইয়ে বীর সারথি ছুতারের উপরে ঠাঁই পাইছে৷ এইভাবে কুমারীর (পারথেনোস) পোলা যাকে পানটিরির পোলা কইয়া নিটকান হইছে পশ্চিমে হইছে নিরীহ ছুতার পুবে হইছে লড়াকু সারথি৷

সারকথা এই যে হজরত ঈসা ও কৃষ্ণের গপ্পের পিছের মূল নায়ক যে একি আছিল তার জোরালো ইশারা আছে৷ লোকে পুরাকালের দুনিয়ার নিখিলায়নভাবের দাম কম দেয় কারণ ওদের বেশিরভাগেরই দেশান্তরে লোকের পরিষাণ ও দূরপাল্লার বাণিজ্যের কোন হদীস নাই৷ একটা গুরুত্বের বিষয় হইল যিশু-কৃষ্ণের গপ্পগুলার উৎস সুবাদে কথা কওয়ার সময় লোকে ভুইলা যায় আরেক বীর কর্ণের কথা যে স্পষ্টই কৃষ্ণের গপ্পের উৎসাহ জাগাইছে বা তার পরে পভাব ফেলছে৷ কর্ণ ও কৃষ্ণ পশ্চিমারা যাকে যিশু কয়, মুসলিমরা যাকে হজরত ঈসা কয় ওই একই লোকের সম্ভবত ব্যাপক সামাজিক ও ইতিহাসগত ব্যবধানের দুইটা ভারতীয় গোত্রের মাঝে চালু দুই সংস্করণ৷ আন্ধার যুগের গুজবে রূপকথায় গড়া ইতিহাস দিয়া সময়ে যিশু ও কৃষ্ণকে বিরাট তফাতে রাইখা, ভালো বৈচারিক রচনাগুলা দুষ্প্রাপ্য কইরা, নাছোড় ওই ইতিহাস আওড়ান সরল সাধারণকে ওদের ভুলের মাঝে রাখে৷